ভিটামিন ‘এ’ ও ‘ডি’

নবম-দশম শ্রেণি (দাখিল) - গার্হস্থ্য বিজ্ঞান - খাদ্যের কাজ ও উপাদান | | NCTB BOOK

ভিটামিন

ভিটামিন- চর্বিতে দ্রবণীয় একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন। ভিটামিন -এর রাসায়নিক নাম রেটিনল এটি বর্ণহীন তাপে কম নষ্ট হয়। তবে উচ্চ তাপে অতিবেগুনি রশ্মিতে নষ্ট হয়।

ভিটামিন ' কাজ-

চোখের স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি বজায় রাখার জন্য এই

বিভিন্ন গ্রন্থিকে স্বাভাবিক কর্মক্ষম রাখে।

বিভিন্ন সংক্রামক রোগের আক্রমণ রোধ করে।

ভিটামিন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে

জীবদেহের সার্বিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে।

ত্বক ঝিল্লির কোমলতা সজীবতা রক্ষা করে।

 রাতের বেলায় বা অন্ধকারে অল্প আলোতে দেখতে ভিটামিন- সহায়তা করে

 

খাদ্য উৎস ভিটামিন এর উৎসকে ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

() প্রাণিজ উৎস ভিটামিন প্রাণিজ খাদ্যে এবং কোনো কোনো প্রোটিনের সাথে যুক্ত অবস্থায় পাওয়া - যায়। ডিম, কলিজা, চর্বিযুক্ত মাছ, সামুদ্রিক মাছ এর কলিজায়, হ্যলিবার্ট শার্ক ইত্যাদি মাছের তেল, ইলিশ মাছ, ইত্যাদিতে পাওয়া যায়। দুধে বিশেষ করে কোলেস্ট্রামে যথেষ্ট ভিটামিন থাকে।

() উদ্ভিজ্জ উৎস উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশে হলুদ, কমলা বা হলদে-কমলা বর্ণের এক ধরনের রাসায়নিক যৌগ বা রঞ্জক পদার্থ থাকে, যেগুলো খাওয়ার পর মানবদেহে ভিটামিন-, তে রুপান্তরিত হয়। এদের ক্যারটিন বা প্রাক ভিটামিন- বলে। সবুজ বা রঙিন শাক সবজি, হলুদ ফলমুল, মিষ্টি কুমড়া, গাজর, মিষ্টি আলু, পাকা পেঁপে, পাকা আম, পাকা কাঁঠাল ইত্যাদিতে প্রাক ভিটামিন- বিদ্যমান

 

অভাবজনিত লক্ষণ

) ভিটামিন এর অভাবে রাতকানা রোগ দেখা দেয়। এই রোগ হলে রাতের বেলায় অল্প আলোতে বা অন্ধকারে দেখার অসুবিধা ঘটে।

) ছাড়া ভিটামিন- এর অভাবে চোখের ঝিল্লি শুষ্ক হয়ে প্রদাহ দেখা দেয়, যাকে জেরোপথ্যালমিয়া বলে। ) ভিটামিন -এর অভাবে চোখের পর্দার অস্বচ্ছতাও হতে পারে। একে কেরাটোম্যালেসিয়া বলে।

) এই ভিটামিনের অভাবে চামড়ার শুষ্কতা হতে পারে।

ভিটামিন-' অভাবে সৃষ্ট চোখের বিভিন্ন রোগ

) রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা হ্রাস পায়।

) ভিটামিন- এর ঘাটতি হলে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়

ভিটামিন—'ডি'

ভিটামিন-ডি এর রাসায়নিক নাম ক্যালসিফেরোল। এটা রিকেট রোগ প্রতিরোধ করে বলে এই ভিটামিনকে রিকেট রোগ প্রতিরোধক ভিটামিন বলে। এটা চর্বিতে দ্রবণীয় কিন্তু পানিতে দ্রবণীয় নয়। তাপে নষ্ট হয় না

ভিটামিন-ডি এর কাজ -

  • ভিটামিন-ডি অস্ত্র হতে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ইত্যাদি লবণ শোষণে সহায়তা করে।
  • দাঁত হাড়ের গঠন পুস্টিসাধনে ভিটামিন-ডি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • প্যারাথাইরয়েড হরমোনের কাজে সহায়তা করে।
  • রক্তে ক্যালসিয়াম ফসফরাসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

উৎস

  • কড মাছের তেল, শার্ক মাছের তেল, হ্যালিবার্ড মাছের তেল ভিটামিন-ডি এর প্রধান উৎস। ছাড়া লিভার, দুধ, দুধজাত খাদ্য, ডিমের কুসুম ইত্যাদি এই ভিটামিনের উৎস।
  • আমাদের ত্বকের নিচে কোলেস্টেরল থাকে। সুর্যের অতিবেগুনি রশ্মির সহায়তায় কোলেস্টেরল থেকে ভিটামিন-ডি উৎপন্ন হয়

অভাবজনিত রোগ

) রিকেট ভিটামিন-ডি এর অভাবে শিশুদের রিকেট হয়। এই রোগে নিচের লক্ষণগুলো দেখা যায়-

শিশুর হাড় নরম অপরিণত হওয়ার ফলে শরীরের বৃদ্ধি হয় না।পায়ের হাড়গুলো বেঁকে ধনুকের মতো আকৃতির হয়।

  • বুকটা সরু অস্বাভাবিক আকৃতি লাভ করে।
  • বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। দাঁতের গঠন ব্যহত হয়।
  • ছোট শিশুদের দাঁতের হাঁটতে দেরি হয়
  • রিকেটে আক্রান্ত শিশুর পায়ের হাড়গুলো বেঁকে ধনুকের মতো আকৃতির হয়েছে।

) অস্টিওম্যালেসিয়া -এই রোগ গর্ভবতী স্তন্যদাত্রী মা বয়স্কদের হয়। এর লক্ষণগুলো হলো-

  • হাড় হতে ক্যালসিয়াম ফসফরাস ক্ষয় হয়ে যায় ফলে ক্রমশ হাড় নরম দুর্বল হয়ে পড়ে।
  • এই রোগে ক্রমশ পা দুর্বল হয়ে পড়ে হাতের উপর ভর দিয়ে চলতে হয়। শেষ অবস্থায় পায়ের হাড়ও মেরুদণ্ড বেঁকে যেতে পারে।
  •  কোমরে পায়ে ব্যথা হতে পারে।

কাজভিটামিন- ডি এর অভাবে আমাদের দেহে কী ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

Content added By
Promotion